বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
বরিশাল রিপোর্ট: বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নথুল্লাবাদ এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে আল আমিন (২৪) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই যুবকেল গলায় দাগ পাওয়া গেছে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আল আমিনের স্ত্রী সহ ৬ জনকে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানায় নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাটিতে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবী মৃতের স্বজনদের।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেও লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বিকাল তিনটায়।
নথুল্লাবাদের শরীফ আবাসিক হোটেলের চতুর্থ তলার ১২৬ নম্বর কক্ষ থেকে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত আল আমিন রাজধানীর বাংলা মোটর এলাকায় ট্রান্সমিটার কোম্পানী প্রিন্স করপোরেশনের জুনিয়র অফিসার এবং বরিশালের উজিরপুর উপজেলার করমন্দাশা এলাকার মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে।
আল আমিনের বোন লাকি আক্তার বলেন, মাসখানেক আগে প্রেমের সম্পর্কের পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় আল আমিন ও নগরীর নিউ সার্কুলার রোড এলাকার হার্ট ফাউন্ডেশন গলির বাসিন্দা কবির হোসেনের মেয়ে এবং সরকারি বরিশাল কলেজের ছাত্রী ইসরাত জাহান মীম। তবে এই সম্পর্ক ও বিয়ে মেনে নেয়নি মেয়ের পরিবার। ঢাকা থেকে এসে শুক্রবার এই হোটেলে ওঠে আল আমিন ও তার স্ত্রী। আমরা ওর স্ত্রীকে বার বার বলেছি যে আমাদের কিন্তু একটা ভাই। ওর যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলছিলাম। ঢাকা থেকে আল আমিনকে ডেকে এনে এই হোটেলে বসে ওই মেয়ের সহযোগিতায় এলাকার কিছু লোকজন এনে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে আল আমিনকে। আমরা সুষ্ঠ বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
মৃতের বাবা মোস্তফা হাওলাদার বলেন, আল আমিনের সামনের মাসে আসার কথা ছিলো বরিশালে। আমাকে ওর স্ত্রী ফোন করে বলছে আল আমিন নথুল্লাবাদে এক্সিডেন্ট করছে। এখন আইসা দেখতেছি আমার ছেলে মারা গেছে। এখন ওরে কারা মারছে কি করছে আমি কিছু জানিনা। আমার একটাই ছেলে। ও আত্মহত্যা করার লোক না। এই ঘটনাটার সুষ্ঠ তদন্ত চাই আমি।
দুলাভাই বশির উদ্দিন বলেন, আল আমিন কোনভাবেই আত্মহত্যা করতে পারেনা। তাকে হত্যা করা হয়েছে। সে ঢাকা চাকুরী করতো। সবার অজান্তে ওই মেয়েকে বিয়ে করে। মেয়ের পরিবার বিয়েতে রাজি ছিলোনা।
এই ঘটনায় আল আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান মীম, তারই এলাকার বাসিন্দা মানিক, সুজন ও সোহেল সহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ওসি কমলেশ চন্দ্র হালদার বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ বিছানায় শোয়ানো অবস্থায় পেয়েছি। তার গলায় একটি দাগ রয়েছে। এখন সে আত্মহত্যা করেছে না হত্যাকান্ড সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। সিআইডির লোকজনও এখানে এসেছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি তবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।