বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল রিপোর্টঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী বরগুনায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে মারধেরের শিকার। মারধরের ঘটনায় মামলা করাকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাং আরিফ বাহিনীর হামলায় ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার ৪ নম্বর কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের ঘটবাড়িয়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- মো. আব্দুল হক (৬০), দেলোয়ার ফরাজি (৪৫), বিপ্লব (৩৩), ইউনুস ফকির (৬০), মো. সেলিম ফরাজি (৬৫) ও আব্দুল করিম (৫০)।
কিশোর গ্যাং লিডার আরিফ একই এলাকার ডাকাত নাকবোচা আবদুল্লাহর ছেলে ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান ইমরানের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে নানাবাড়ি বরগুনার কেওরাবুনিয়া এলাকায় বেড়াতে আসেন আরিফ ফরাজী নামে এক যুবক। পরে আরিফ ওই এলাকার ঘটবাড়িয়া বাজারে গেলে কিশোর গ্যাং লিডার আরিফের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক তার মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিডিও আছে কিনা দেখতে চান। এ সময় তার ফোনে আন্দোলনের ভিডিও থাকায় তাকে মারধর করাসহ মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন তারা।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আরিফ থানায় মামলা করলে কিশোর গ্যাং লিডার আরিফের নেতৃত্বে তার বাবা ডাকাত আবদুল্লাহ, নিজাম, বাদল, রাজিব ও সজিব, বাদশা, সজিবসহ ৫০/৬০ জন ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী আরিফ ফরাজীর চাচা সেলিম ফরাজিসহ মামলার পক্ষে অবস্থান নেওয়া কয়েকজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গুরুতর আহত আব্দুল হকের স্ত্রী সালেহা বেগম বলেন, আমার স্বামীর সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। তিনি একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। সন্ধ্যায় কয়েকজন যুবককে অস্ত্র হাতে নিয়ে আসতে দেখে আমি তাকে দোকান বন্ধ করতে বলি। পরে দোকান বন্ধ করে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ছাড়া দোকানে হামলা চালিয়ে সবকিছু ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আরিফের চাচা আহত মো. সেলিম ফরাজি বলেন, আমার ভাতিজা আরিফ নারায়ণগঞ্জ থেকে বরগুনায় এলে আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চান এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার আরিফসহ কয়েকজন যুবক। এ সময় আরিফ তাদের বলে যে, সে আন্দোলন করেনি। কিন্তু তারা মানতে রাজি না হয়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন এবং আরিফকে মারধর করেন। পরে আহত অবস্থায় আরিফকে হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের নামে থানায় একটি মামলা করি। এরপর বিকেলে আমরা ঘটবাড়িয়া বাজারে গেলে সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ অস্ত্র হাতে কয়েকজন এসে আমাকেসহ আশপাশের অনেককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন।
বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আব্দুল হালিম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশ কাজ শুরু করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।