বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
একাধিক মামলার আসামি খুলনার সংসদ সদস্য কুয়াকাটায় গ্রেফতার  মহিষ বাধাকে কেন্দ্র করে মেহেন্দিগঞ্জে একজনকে পিটিয়ে জখম। মঠবাড়িয়ায় মন্দিরের মাটি কাটা কে কেন্দ্র করে বাপ ছেলেকে পিটিয়ে জখম। মেহেন্দিগঞ্জে শাশুড়ি কর্তৃক মেয়ে জামাইয়ের উপর হামলা। বাউফলে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মৎস্যজীবি দলের সভাপতিকে দল থেকে অব্যাহতি বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের ৪ নেতা-কর্মীর জামিন মঞ্জুর কাঠালিয়ায় যড়যন্ত্রমূলক হত্যা মালায় দুই ব্যক্তিকে আসামী করে হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন নগরীতে চুরির প্রতিবাদ করায় দুই যুবককে পিটিয়ে জখম  পাথরঘাটা দেবর কর্তৃক বড় ভাবিকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ।
ক্লান্ত ছিলেন চালক টানা ৩৩ ঘণ্টা বাস চালিয়ে

ক্লান্ত ছিলেন চালক টানা ৩৩ ঘণ্টা বাস চালিয়ে

অনলাইন ডেক্সঃ মাদারীপুরে দুর্ঘটনায় চালক জাহিদ হাসান (৪৫)  টানা ৩৩ ঘণ্টার বেশি বাস চালিয়ে ক্লান্ত ছিলেন  । মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় চালকসহ ২০ যাত্রী নিহত হন। চালক ক্লান্ত শরীরে চোখে ঘুম নিয়ে অতিরিক্ত গতিতে বাস চালানোর জন্য এতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।

রোববার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে খাদে পড়ে যায়। এ সময় বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় নিহত ছাড়াও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ জন।

পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত ২০ জনের মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি কক্ষে রাখা হয়। বাকি দুজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনের নাম-পরিচয় মিলেছে।

অন্যান্য জেলার নিহতরা হলেন- মুকসুদপুরের মো. আমজাদ আলীর ছেলে মাসুদ মিয়া (৩৫), খুলনার সোনাডাঙ্গার শেখ আহমদ মিয়ার ছেলে শেখ আব্দুল আল মামুন (৪২), নড়াইলের লোহাগাড়ার বকু শিকদারের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৬৭), ফরিদপুর আলফাডাঙ্গা এলাকার শহিদ মুরাদ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৮), বনগ্রাম এলাকার শামসুল শেখের ছেলে মোসতাক আহম্মেদ (৪৭), ডুমুরিয়া এলাকার পরিমল সাদু খায়ের ছেলে মহাদেব কুমার সাদু খা (৫৫), আমতলা এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে আশফাকুজ্জামান লিংকন (২৬) এবং বাগেরহাটের শান্তি রঞ্জন মজুমদারের ছেলে অনাদি মজুমদার (৩০)। বাসচালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলী আকবরের ছেলে জাহিদ হাসান ও চালকের সহকারী মো. মিরাজ।গোপালগঞ্জের নিহত ৭ জন হলেন- গোপালগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনাদী রঞ্জন মজুমদার (৫০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সদরের মাসুদ মিয়ার মেয়ে সুইটি আক্তার (২২), সদরের মাসুম মিয়ার ছেলে মোস্তাক শেখ (৪১), টুঙ্গিপাড়ার মো. কাঞ্চন শেখের ছেলে শেখ কবির হোসেন (৫৭), ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সদরের আবু হেনা মোস্তফার মেয়ে আফসানা মিমি (২৫), একই উপজেলার নওশাদ শেখের ছেলে সজীব (২৭), গোপিনাথপুরের তৈয়ব আলীর ছেলে হেদায়েত মিয়া (৫৫)। বাকিদের নাম-পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।

গতকাল বিকেলে চালক জাহিদের ছেলে রাতুল হাসান বাবার মরদেহ শনাক্ত করার জন্য শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তিনি  বলেন, মাসে দুই দিন বাড়ি আসতেন বাবা। গাড়ি চালিয়ে তিনি সব সময় ক্লান্ত থাকতেন। গত পরশু ঢাকা, পিরোজপুর, খুলনা রুটে পাঁচটি ট্রিপে গাড়ি চালিয়েছেন। বাবা শনিবার রাতে ফোনে জানান, তিনি অনেক ক্লান্ত ছিলেন। রোববার ঢাকার থেকে এসে বাসায় এক দিন বিশ্রাম নেবেন এক কথাও বলেছিলেন। কিন্তু বাবা আমাদের চিরতরে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন।’

চালকদের ব্যস্ত সূচি ও বিশ্রামের ঘাটতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইমাদ পরিবহনের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির বাস যারা চালান, তাদের বিশ্রামের জন্য প্রতিটি জায়গায় আমাদের ঘর রাখা আছে। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির চালক জাহিদ ক্লান্ত ছিলেন, তিনি এমন কথা আমাদের কাউকে জানাননি।’

শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক  বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি, ইমাদ পরিবহনের বাসটির চালক কোনোরকম বিশ্রাম না নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন। দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টা ধরে গাড়ি চালানোর কারণে ক্লান্ত ছিলেন। সকাল সকাল ঘুম ঘুম চোখে বাস চালানোয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি।’

আহত এক যাত্রী সাইফুল জানান, খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে বাসটি ছাড়ার পর হাইওয়েতে উঠেই বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালানো হচ্ছিল। আমরা যাত্রীরা কয়েক দফা বারণ করেছিলাম। কিন্তু চালক কারও কোনো কথা শোনেনি। চালকের গাফিলতির কারণে আজকে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম বলেন, এখানে ১৭ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। পরে চালকের নাম পাওয়াসহ মোট ১৭ জনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। বাকিদের নামপরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শনাক্তকৃতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

ফরিদপুর জোনের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মাহাবুবুল হাসান  বলেন, ‘বাসটির ফিটনেসেও যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। তদন্ত শেষে বাসটির মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media




পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
DEVELOP BY SJ WEB HOST BD
Design By Rana