শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
বিধবা কারামুক্ত, স্বামী পরিত্যক্তা ও আগুনের পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ কর্মহীন নারী ও পুরুষের মধ্যে করোনাকালীন আয়ের উৎস হিসেবে সেলাই মেশিন বিতরন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দারের অনুরোধে সমাজ সেবক মোঃ মিজানুরর রহমানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ১০জনকে এই সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো ১০ জনের মধ্যে এই মেশিন বিতরন করা হবে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভা কক্ষে সোমবার দুপুরে এগুলো বিতরন করা হয়।
সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজের ব্যাবস্থাপনায় এগুলো বিতরনের সময় জেলা প্রশাসক সহ সিটি করেপোরেশনের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লবসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বামী পরিত্যাক্তা সোমা রানী দাস জানান, তার স্বামী তাকে ভরন পোষন দেয় না। ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে নগরীর গোড়াচাঁদ দাস রোডে তিনি থাকতেন। স্বামী অন্যত্র বিয়ে করতে চায় বিধায় তাকে ফেলে চলে যায় তার স্বামী। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে বলে জানান সোমা রানী দাস। সেলাই মেশিন পাওয়ায় সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করবেন বলে জানান তিনি।
বিধবা নাজমুন নাহার লইজু জানান, তার স্বামী এটিএম বুথের গার্ড ম্যান হিসেবে কর্মরত ছিল। দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে তার সংসার। স্বামী মারা যাওয়ায় তার দুরাবস্থা নেমে আসে। এখন সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন তিনি।
আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্থ জান্নাতুল ফেরদৌস তিথী বেগম জানান, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের দুই তারিখ নগরীর পশ্চিম কাউনিয়ায় তিথী বুটিকস নামে তার দোকান আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে যায়। সেলাই মেশিন পেয়ে তার কিছুটা হলেও সহযোগীতা হবে।
কারামুক্ত জসিম উদ্দিন জানান, তিনি কারাবন্দি থাকা অবস্থায় জেল হাজতে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা হলে তার কাছে মৌখিকভাবে সহায়তা চান তিনি। তখন জেল থেকে বের হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে বলেন। তিনি সেলাই এর কাজ জানেন বিধায় তাকে এই সেলাই মেশিন বিতরন করা হয়।
সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সাজ্জাদ পারভেজ জানান, ঘরে বসে সেলাই করে সংসার চলানো সম্ভব বিধায় সেলাই মেশিন বিতরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যারা সেলাই জানেন না তারা টিটিসি থেকে বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষন নিতে পারবেন বলেও জানান সাজ্জাদ পারভেজ।
এ সময় জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার জানান, ব্যক্তিগত ভাবে অনেক দানশীন ব্যক্তিরা আছেন যারা সমাজের গরীব মানুষদের স্বাবলম্বী করতে ভূমিকা রাখতে চায়। তাদের প্রতি তিনি আহবান জানিয়ে বলেন, দেশটাকে শুধু সরকার একা নয় সবাই মিলেই সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। করোনাকালিন সময়ে এই মেশিন দিয়ে কিছুটা হলেও অসহায় এই মানুষগুলো ঘরে বসে সেলাই কাজ করে আয় করতে পারবে।
তিনি আরো জানান, পর্যায়ক্রমে মাল টানা ভ্যান, চটপটি ফুসকা বিক্রীর ভ্যান এবং অসহায়, গরীব, বেকারদের বিনামূল্যে আইটি প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থাও করার উদ্যোগ নেবে জেলা প্রশাসক। মিডিয়ার স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের জন্যও বিনামূল্যে আইটি প্রশিক্ষনের এই ব্যাবস্থা করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।