বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন
হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের কর্মসূচি চলাকালে হাটহাজারী, ব্রাক্ষ্মণবাড়ীয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা এবং পুলিশ-বিজিবির গুলিতে হেফাজত কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বরিশালে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
“হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ”-এর কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বিকাল ৪টায় বরিশাল নগরীর বাজাররোডস্থ জামিয়া আরাবিয়া খাজা মঈন উদ্দিন মাদ্রাসা ময়দানে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর জামিয়া আরাবিয়া খাজা মঈন উদ্দিন মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা আব্দুল হালীমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাও. আব্দুল খালেক, মাওলানা শেখ সানাউল্লাহ মাহমুদী, মাওলানা মোখলেছুর রহমানসহ অন্যান্য অনেকে।
এসময় বক্তারা বলেন, গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদির আগমন কোন ভাবেই জনগণ সহ্য করতে পারছিল না, তাই তারা প্রতিবাদ করেছিল এবং মোদির প্রতি ঘৃণা প্রদর্শণ করেছিল, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। মোদি আসায় বাংলাদেশের মন্দিরে ফুল আর মসজিদে রক্ত পরেছে। মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে সারাদেশের মানুষ যখন স্বতস্ফুর্তভাবে ঘৃণা প্রকাশ করছিল, তখন পুলিশ বাহিনীর সাথে সরকারের দলীয় ক্যাডাররা দেশপ্রেমিক তাওহিদী জনতার উপর নগ্ন হামলা, টিয়ার শেল, গুলি চালিয়ে হাটহাজারীতে ৪ জনসহ মোট ২০ জনকে নিহত করেছিল, শত শত মানুষকে আহত করেছিল, যারমধ্যে এখনো অনেকে মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন কসাই মোদির জন্য দেশের ইসলামপ্রিয় জনগনের উপর এই হামলার ঘটনা এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে । আধিপত্যবাদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী কসাই মোদিকে খুশী করার জন্য দেশের জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে ও ইসলামপ্রিয় মানুষের রক্তে হাত রাঙ্গিয়ে সরকার জালিমের আসনে বসেছে । দেশপ্রেমিক, ইসলামপ্রিয় তাওহিদী জনতার উপর এই হামলা ও হত্যার দায় সরকারকে বহন করতে হবে । আজকে কসাই মোদির জন্য দেশবাসীকে সুবর্ণজয়ন্তি উদ্যাপন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ২৭ মার্চ সারা দেশে নজীরবিহিন হরতাল পালিত হয়েছিল সেখানেও পুলিশ ও লীগ বাহিনীর হাতে এদেশের তৌহিদী জনতা অত্যাচারিত হয়েছে। পুলিশ ও লীগবাহিনী বিক্ষিপ্তভাবেগুলি চালিয়ে নির্দোষ, নিরাপরাধ জনতার রক্ত ঝড়িয়েছে ।
২৭ মার্চ হরতাল থেকে অনেক নির্দোষ জনতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং যারা আন্দোলন করেছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করা হচ্ছে ।
এসময় বক্তারা ৫ দফা দাবির কথা তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো, ছাত্রলীগ, যুবলীগ-এর মধ্যে যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদেরকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা, যাদের ইশারায় ও যাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রিয় মুসুল্লিদের উপর গুলি চালানো হয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, সরকারের সন্ত্রাসী লীগ বাহিনীকে সর্বধরনের জাতীয় ইশু থেকে বিরত রাখা, সরকার বাংলাদেশের মাটিতে ইসলাম ও মুসলমানদের মতামতের বাহিরে কোন ইসলামী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না, অন্যায়ভাবে যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে এবং গণগ্রেপ্তার ও নিরাপরাধ মানুষদের হয়রানী বন্ধ করা।
এসময় বক্তারা তাদের ৫ দফা দাবী অনতিবিলম্বে মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করার দাবি জানান, অন্যথায় তৌহিদী জনতা রাজপথে আবারো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুশিয়ারী দেন।
সমাবেশ শেষে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সমাবেশে উপস্থিত হেফাজতের নেতা-কর্মী ও মুসল্লীরা। মিছিলটি অশ্বিনী কুমার হল প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।
এদিকে হেফাজত ইসলামের কর্মসূচী ঘিরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়ন করা হয়।