বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
শামীম আহমেদঃ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে চারজনের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায়।
যাদের মরদেহ ইতিমধ্যে স্বজনরা বুঝে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন এবং দাফন কার্য সম্পাদন করছেন বলে আজ মঙ্গলবার (০৪ মে) সকাল সোয়া ৯ টায় জানিয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ মনির হোসেন।
তিনি জানান, পথে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় তারা ঘটনাস্থলে পৌছাতে দেরি করেন। তবে সোমবার সন্ধ্যায় মরদেহগুলো স্বজনরা বুঝে পেয়েছেন।এরপর অ্যাম্বুলেন্সযোগে সড়কপথে মরদেহগুলো নিয়ে মেহেন্দিগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন এবং মঙ্গলবার ভোর রাত ৩ টার দিকে মরদেহগুলো নিয়ে হিজলা হয়ে মেহেন্দিগঞ্জে পৌছান।সকাল ৯ টার দিকে উলানিয়ার ৩ বাসিন্দার জানাজা সম্পন্ন হয়ে দাফনকার্য চলছে আর পাতাহাটের ব্যবসায়ীর নামাজের জানাজা সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হয়।
এই ইউপি মেম্বার জানান, দুর্ঘটনায় তার আপন চাচাতো ভাই ও মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার খরকী এলাকার আব্দুল মন্নান চাপরাশির ছেলে ও পাতারহাট বন্দরের মুদি ব্যবসায়ি মনির চাপরাশি (৩৫) নিহত হয়েছেন। সে আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ঢাকায় মালামাল আনতে গিয়েছিলেন। মালামাল জাহাজে তুলে দিয়ে নিজে সড়ক পথে ফিরছিলেন। দোকানের জন্য কেনা ঈদের মালামাল এখনো বন্দরে পৌছেনি কিন্তু তার আগে পথিমধ্যে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় চির বিদায় নিতে হলো মনিরকে।আর এখন তার লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরছি। তিনি বলেন, পরিবারের একমাত্র ছেলে বলতেই ছিলো এই মনির, যার দুটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা বাকি তিনজন হলেন, মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া ইউনিয়নের পূর্বষাট্টি গ্রামের বাসিন্দা সাদেক ব্যাপারীর ছেলে ও উলানিয়া বাজারের আহাদ ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী দুই ভাই রিয়াজ হোসেন (৩৩) এবং সাইফুল ইসলাম (৩৫)। এছাড়া একই ইউনিয়নের আশা গ্রামের বাসিন্দা রত্তন হাওলাদারের ছেলে উলানিয়া বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সাইদুল হোসেন (২৭)।
নিহত রিয়াজ ও সাইফুলের বড় ভাই আজাদ হোসেন জানান, তার দুই ভাই দোকানের মালামাল কেনার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন। ফেরার সময় পদ্মা পাড়ি দিতে তারা প্রথমে গাছবাহি একটি ট্রলারে ওঠেছিলো । কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নামিয়ে দেয়ায় স্পিডবোটে উঠলে দুর্ঘটনায় দু’জনই প্রাণ হারালো। সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবরে তার ভাইদের নাম প্রথমে জানতে পারেন। পরে শিবচর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ফোনে দুর্ঘটনার খবরটি নিশ্চিত করা হয়।
তিনি জানান, নিহত সাইফুল মাত্র তিন মাস আগে বিয়ে করেন, আর রিয়াজের দুটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে।
অপরদিকে অপর নিহত উলানিয়া বাজারের বোরকা’র দোকানের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামও একই দুর্ঘটনায় নিহত আজাদ হোসেনের ভাইদের সাথে ঢাকায় গিয়েছিলেন।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, শিবচরের দূর্ঘনায় তিন এলাকার চারজনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় পুরো মেহেন্দিগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের কান্নায় নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।