জাকারিয়া জাহিদ,কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকূলের চারদিকে বাতাসে সোনালী ধানেরশিষ দুলছে, দোল খাচ্ছে সোনালী-সবুজের আভায় বোরো ধানের ক্ষেত। সবুজের সমারোহে “ধনো ধান্যে – পুস্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা চ্ – কথাটির স্বার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায়।
কৃষককুল এ মৌসুমে নানা প্রতিকুলতার মধ্যে বোরো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। বীজতলায় পানি দেয়া, সার-কীটনাশক প্রয়োগ এবং পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করাসহ বোরো পরিচযার্য় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষকরা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জমির ধান নিবির পরিচর্যা করে পুর্নাঙ্গ বড় হওয়ার পর ধানের বাইল খুব ভালোই ছড়াচ্ছে।
এলাকার অনেক মাঠে পামড়ি, মাজরা, শিশ কাটা, কারেন্ট, সাদাপোকা, কালোপোকায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মাঠে পোকার আক্রমন রয়েছে, তারপরও ভালো ফলনের আশা করছে কৃষকেরা। যেটুকু রোপন করা হয়েছে সে টুকুতেই ভাল ফলন হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে রোপা বোরো ফলন ভালো হওয়ার আশা করছে কৃষকেরা। ক্ষেতজুড়ে উকি দিচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সোনালী ধানেরশীষ বের হয়ে আসছে।
ফসল ঘরে তোলার আশায় কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ। রোপা বোরো ধান বাম্পার ফলনের সম্ভবনায় কৃষকরা বেশ খুশি। কথদিন পরেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা স্বপ্নের সোনালী ধান কাটা শুরু করবে। কৃষক-কৃষানীরা মনের আনন্দে চলতি মৌসুমে ফসল ঘড়ে তুলবে। বইবে আনন্দের বন্যা।
ফুটবে মুখে হাসি। বর্তমান নানা প্রতিকুলতার কারনে এখন আর আউস চাষ হয় না। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে কৃষক আবহাওয়ার সাথে মিলিয়ে ধান চাষ করছে কৃষকেরা। চলতি বছর আমন ধানের ভালো দাম পাওযায় চাষীরা এখন বোরো মৌসুমে বোরো ধান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে।
কৃষি অফিসের তথ্য সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া উপজেলার আয়তন ৪৯২১০২ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে পৌরসভা ২টি, ইউনিয়ন ১২ টি, গ্রাম ২৪৭টি। এখানে মোট জমির পরিমান ৪৯২১০ হেক্টর। যার মধ্যে কৃষি জমি ৪০৯৪০ হেক্টর। এ বছর ৪০০০ হাজার হেক্টার জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এ উপজেলার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কোন না কোন পযার্য় কৃষি কাজের সাথে। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম আশা করছেন চাষীরা। বোর চাষে কৃষকদের আদর্শ চারা উৎপাদন ও জমিতে পারচিংসহ (ডাল পোতা) সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিস। তবে সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর দাবি চাষীদের। কোন প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাবেন চাষীরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ধান গাছের বুকচিরে বেরিয়ে আসছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। প্রত্যন্ত গ্রাম-গায়ের কৃষকরা তাদের ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছে। বাতাসে সোনালী ধানের শিষ দুলছে। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঁঞ্চি ও গাছের ডালের উপর ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে আছে। সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। আবার অনেকে অধিক ধান পাওয়ার আশায় নিজ নিজ জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছে। কেউ আবার ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছে। তবে কখন নতুন ধান ঘরে তুলবে এ স্বপ্নে বিভোর উপকূলের ওইসব কৃষকরা। তবে আর কিছু দিন পর ধান কাটা শুরু হবে। অনেক জায়গায় বোরো চাষ করে পানির কারনে বোরা চারা রোদে পুড়ে মারা গেছে। শুধু পানির অভাবে আবার অনেক কৃষকের বোরো ধানের শিষ বেরা হচ্ছে না। জমি ফেটে চেীচির হয়ে গেছে। কৃষকের দাবি, যে সব খাল গুলো ভরাট হয়ে ও বেদখল হয়ে গেছে খাল গুলো উদ্ধার করে খনন করলে পানির সমস্যা সমাধান হবে।
ধুলাসার ইউনিয়নে চরচাপলী গ্রামের কৃষক মো: জমির মিয়া বলেন, ভালো মুনাফার আশায় বোর ধান চাষ করছি। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কৃষকের সরকারী বরাদ্ধকৃত সার, বীজ প্রত্যক্ষ কৃষকেরা পায়না। রাজনৈতিক ছত্রছায়া যারা আছে তাদের নামে বরাদ্ধ করা হয় সার, বীজ। স্লুইজ নিয়ন্ত্রন ব্যাপারে পানি নিয়ে রয়েছে বড় সমস্যা।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা আবদুল মান্নান এ প্রতিবেদককে জানান, আমন ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা এ বছর ব্যাপকভাবে বোরো চাষ করেছে। এখন যদি বৃষ্টি হতো তা হলে কৃষকের পানি নিয়ে যে সমস্যা তা দুর হতো। বোরো ধানের গাছের অবস্থা খুবই ভাল হয়েছে। কৃষি অফিস কৃষকের পাশে থেকে যথাসম্ভব পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
###